ব্র্যান্ডিং এ কালার সাইকোলজি - রঙের শক্তি সম্পর্কে ধারনা
২০২৩ সালের ট্রেন্ডি UX/UI ও প্রডাক্ট ডিজাইন সম্পর্কে এখনি জেনে নিন
-----লার্ন ডিজাইন//
“ব্র্যান্ডিং ও প্রোডাক্ট ডিজাইনের প্রাথমিক বিষয় হচ্ছে কালার সাইকোলজি। এই গাইডটি আপনাকে কালার সাইকোলজি কি এবং কিভাবে কালার সাইকোলজি ব্যবহার করে নিজের ব্র্যান্ডকে আরো উন্নত করতে হয় সে বিষয়ে পুরোপুরি ধারণা পেতে সাহায্য করবে।
প্রতিদিনের জীবনে আমরা এরকম অসংখ্য জিনিস দেখি ও ঘটনার সম্মুখীন হই যা আমাদের মন, দৃষ্টিভঙ্গি, পছন্দ এবং সিদ্ধান্তের উপর প্রভাব ফেলে। রঙ এত দ্রুত যোগসূত্র তৈরি করতে পারে যে, আমরা টের পাবার আগেই এটি আমাদের আবেগকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। এজন্যই ডিজাইনারদেরকে বুঝতে হবে কিভাবে কালার সাইকোলজি কাজ করে; হোক সেটি ফাংশনাল কিংবা ইমোশনাল। তাই কালার সাইকোলজি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে আসুন শিখি কালার সাইকোলজির বেসিক ব্যাপারগুলো কি এবং এটা কিভাবে ইউজার বিহেভিয়ারের উপর প্রভাব ফেলে।
কালার সাইকোলজি কী?
কালার সাইকোলজি হচ্ছে কিভাবে এবং কেন রঙ আমাদের অনুভূতি এবং আচরণের উপর প্রভাব ফেলে সেটা বোঝার বিদ্যা।যখন আমরা কোনো রঙের মুখোমুখি হই আমাদের ব্রেন এবং এন্ডোক্রাইন সিস্টেম সেটি ইনপুট হিসেবে নিয়ে হরমোন নিঃসরণ করে। তাই এটি আমাদের আবেগের উপর অবচেতনভাবেই প্রচন্ড প্রভাব ফেলতে পারে।
The Institute Of Color Research এর মতে মানুষ অবচেতনভাবে কোনোকিছু দেখার ৯০ সেকেন্ডের মধ্যেই বস্তুটি বা ব্যক্তিটিকে তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করে এবং এর ৬২% থেকে ৯০% -ই হয়ে থাকে শুধুমাত্র রঙের উপর ভিত্তি করে। তাই একজন ডিজাইনারকে অবশ্যই UI/UX -এর পেছনের রঙের খেলা বুঝতে হবে।
যেখানে কালার থিওরি ডিজাইনারদের রঙের প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রঙের মেলবন্ধন তৈরি করা শেখায় , সেখানে কালার সাইকোলজি আমাদের মন ও আবেগের রঙ বুঝতে শেখায়। রঙের ব্যবহার UX/UI ডিজাইনের মেমোরেবিলিটি বাড়ায়।
কালার সাইকোলজির মূলনীতি
রঙের সাইকোলজি ছয়টি প্রাথমিক বিষয়কে ধারণ করেঃ
১। রঙের অর্থ রয়েছে
২।জীবন ও পরিবেশ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা থেকে রঙের অর্থ করা হয়।
৩।রঙের অনুভূতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষের বিচার করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।
৪। রঙ বিচার করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে আচরণকেও নির্ধারন করে।
৫। রঙ স্বতন্ত্রভাবেও প্রভাবিত করতে সক্ষম।
৬।রঙের অর্থ এবং এর প্রভাব কোনো বিষয় বা প্রসঙ্গ দ্বারা নির্ধারিত হয়।
এই মূলনীতিগুলো ডিজাইনাররা ভিন্ন ভিন্ন ইউজারের ইউজেবিলিটি বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে পারে।
ব্র্যান্ডিং এর ক্ষেত্রে কালার সাইকোলজি কেনো গুরুত্বপূর্ণ ?
মার্কেটিং এর উপর রঙের প্রভাব সম্পর্কিত একটি রিসার্চে দেখা যায় ৬২-৯০% ক্ষেত্রে মানুষ শুধুমাত্র রঙের উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বস্তুকে বিচার করে থাকে। মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিং -এ কালার সাইকোলজি ব্যবহার করে রাইট ইম্প্রেশন তৈরি করার মাধ্যমে ব্র্যান্ডের সাথে কাস্টমারের ইউজার এনগেজমেন্ট বাড়ানো হয়।
কিন্তু এখানে একটি সূক্ষ্ণ চাল রয়েছে। ডিজাইনাররা সবসময় রঙের সার্বজনীন অর্থের উপর ভরসা করতে পারবেন না। কারণ রিসার্চে দেখা গেছে, মানুষ কালার চয়েজের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দ, অভিজ্ঞতা, বেড়ে-ওঠা, জাতিগত বৈচিত্র এবং কনটেক্সট এর উপরেও নির্ভর করে। যেমন, হলুদ রঙের একটি গাড়ি যদি কোনো কাউকে ধাক্কা দেয় তাহলে হলুদ রঙটি ব্যক্তির নেগেটিভ ইমোশন জাগিয়ে তুলতে পারে যতোই হলুদ রঙ এর সার্বজনীন অর্থ পজিটিভিটি, ইতিবাচকতা, সূর্য এবং আনন্দ হোক না কেন।
এখানে ভালো বিষয়টি হচ্ছে যদি আপনার ব্র্যান্ডের কালারটি আপনার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাহলে ইন্ডিভিজুয়াল কালার মিনিং এর নিয়মটি এখানে প্রভাব ফেলবে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সঠিক ব্র্যান্ড কালার খুঁজে বের করার জন্য কি কি বিষয় মাথায় রাখতে হবে ?
রঙ— যা ব্র্যান্ডের পার্সোনালিটি ফুটিয়ে তোলে
সাইকোলজিস্ট, স্ট্যান্ডফোর্ড প্রফেসর জেনিফার অ্যাকার এর মতে, ৫ টি ডাইমেনশন একটি ব্র্যান্ডের পার্সোনালিটিতে প্রভাব ফেলে। কিছুটা মানুষের বাহ্যিক আচরণের মত। একটি ব্র্যান্ড সাধারণত নিচের একটি বা দুইটি বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হতে পারেঃ
- সিনসিয়ারিটি : ডাউন-টু-আর্থ, অনেস্ট, হোলসাম
- এক্সাইটমেন্ট : ইমাজিনেটিভ, আপ-টু-ডেট
- কম্পিটেন্স : রিলায়েবল, ইন্টিলিজেন্ট, সাকসেস্ফুল
- সফিস্টিকেশন : আপার-ক্লাস, চার্মিং
- র্যাগেডনেস : আউটডোর্সি, টাফ
অডিয়েন্সকে জানুন
অডিয়েন্স ডেমোগ্রাফিক এর উপর ভিত্তি করে আপনার ব্র্যান্ডের রং নির্বাচন করা পুরোপুরি সঠিক সিদ্ধান্ত নাও হতে পারে। যদিও কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয় যে পুরুষরা বোল্ড কালার এবং শেড পছন্দ করেন (কালচে), অন্যদিকে নারীরা সফট কালার এবং টিন্ট পছন্দ করেন (হালকা সাদাটে)। কিন্তু শুধুমাত্র এর উপর নির্ভর করে ব্র্যান্ড কালার নির্বাচন করা উচিত নয়। পরিবর্তে, আপনার ব্র্যান্ড ইউজাররা কী প্রেফার করে সেটির উপর ফোকাস করুন। মূলত কালচারাল ও জেন্ডার স্টেরিওটাইপগুলিকে দূরে সরিয়ে ইউজারদের তাঁদের প্রত্যাশার চাইতে ভালো কিছু দেওয়া আপনার ব্র্যান্ডকে আরও বেশি উপকৃত করতে পারে।
ব্র্যান্ড পরিচিতিতে জোর দিন
কিছু রঙ নির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত, যেমন-লাল এবং কমলা ফাস্ট ফুডের সাথে,সবুজ ইকোলজি এবং বায়ো-প্রডাক্টের সাথে সম্পর্কিত হলেও ক্রিয়েটিভ ব্র্যান্ড কালার বাছাই আপনার ব্র্যান্ডকে সবার চেয়ে আলাদা একটি পরিচয় তৈরি করে দিতে পারে যা আপনার ব্র্যান্ডকে প্রতিযোগীদের মধ্যে উদাহরণ করে তুলতে পারে।
এছাড়া, মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিং উপকরণ (লোগো, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, বিজ্ঞাপন, ইত্যাদি) জুড়ে এবং ইন্টারফেসে সেম ব্র্যান্ড কালার ধারাবাহিকভাবে ব্যবহার করা হলে এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপনার ব্র্যান্ড কানেকটিভিটি এবং ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস দুটোই বাড়াতে সাহায্য করবে।
ব্র্যান্ড কালারে সাইকোলজি এবং বিভিন্ন রঙের অর্থ
মানুষের চোখ মূহুর্তের মধ্যে রঙকে প্রসেস এবং ডিকোড করে, ডিজাইনারদের ভিজুয়াল হায়ারার্কি এমপ্লিফাই করতে এবং বিশেষ উপাদানগুলির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম করে। তাই রঙের পিছনের সাইকোলজি শেখা UX ডিজাইন শিক্ষার একটি অপরিহার্য অধ্যায়। এবার আসুন জেনে নেয়া যাক কিছু রঙের অর্থ করি এবং কেন রঙ আমাদের প্রভাবিত করে। তবে মনে রাখা ভালো যে, এগুলি তথাকথিত পশ্চিমা সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য মনে হতে পারে।
কালার সাইকোলজি—লাল
লাল মূলত শিশুদের রঙ। এটি অনেক উজ্জ্বল হওয়ায় মনযোগ আকর্ষণে সক্ষম। লাল মূলত শক্তির প্রতীক।অনেক সময় এটি প্রেম-আবেগ-রাগ-বিপদের তীব্রতা বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়। যেহেতু লাল হাই টেনশন শো করে, তাই অনেকসময় এটি উদ্বেগ ও ক্লান্তির কারণ হতে পারে।তাই লাল রঙটি খুব ভেবেচিন্তে ব্যবহার করা উচিৎ।
লাল রঙের ব্যবহার
- লাল ও কমলা রঙ ক্ষুধা বাড়ায় তাই এটি ফাস্ট ফুড ও খাবারের এপসে ব্যবহার করা হয়।
- তীব্র আবেগ, শক্তি, কনফিডেন্স ও যৌন আবেদন বোঝায়।
- লাল যুদ্ধ, আক্রমণ এবং ক্ষমতার প্রতীক।
কালার সাইকোলজি—সবুজ
সবুজ প্রকৃতির প্রতীক। একে বলা হয় ভারসাম্য ও সম্প্রীতির প্রতীক।সবুজ তারুণ্য, উন্নতি ও পুনর্জীবন এর সাথে সম্পৃক্ত।সবুজ বিভিন্ন “গ্রীন” টপিক যেমন, ইকোলজি,সাসটেইনিবিলিটি, এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশোন এবং সুষম খাবার -এ ব্যবহৃত হয়।
সবুজ রঙের ব্যবহার
- সবুজ মানসিক শান্তি ও মনযোগ বাড়ায়।
- সবুজ স্বাস্থ্য-সম্পদ-বৃদ্ধির সাথে সম্পৃক্ত।
- গাঢ় সবুজ বিশ্বাস ও আনুগত্য বোঝায়।
কালার সাইকোলজি—নীল
নীল বিশ্বাস, স্থায়িত্ব, নির্ভরযোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার প্রতীক হওয়ায় বিজনেস ও ব্যাংকিং সফটওয়্যারে নীল বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়।কিন্তু ওয়ার্ম কালারের বিপরীতে নীল কিছুটা ডিসটেন্ট ও ইমোশনলেস মনে হতে পারে।
নীল রঙের ব্যবহার
- নীল প্রশান্তি, নিরাপত্তা ও বিশ্বাসের উপর জোর দেয়।
- নীল অনেক সময় নেতিবাচক আবেগের প্রতীক।
কালার সাইকোলজি—বেগুনি
বেগুনি রংটি রেয়ার হওয়ায় এটি রয়্যাল ও এক্সক্লুসিভলি রিচ কালার হিসেবে বিবেচিত হয়। ঐতিহাসিক কারনে এটি আভিজাত্য,রাজকীয়তা ও বিলাসের প্রতীক। লালের শক্তি ও নীলের বিস্বস্ততার সাথে এটি খুব ভালো মিশে যায়।কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহার ইউজারকে বিভ্রান্ত করতে পারে।
বেগুনি রঙের ব্যবহার
- বেগুনি আধ্যাত্নিকতা, আভিজাত্য ও সৃজনশীলতার প্রতীক।
- বেগুনি দ্বারা ব্র্যান্ডকে প্রতুলতা, অন্তর্মূখী ও বিষাদের রূপ দেয়া যায়।
কালার সাইকোলজি—কালো
কালো এমন একটি রঙ যাকে সব রঙের সাথে ব্যবহার করা যায়। কালো মূলত কনট্রাস্ট ক্রিয়েট করে তাই এটি ব্যাকগ্রাউন্ড কালার হিসেবে পারফেক্ট, বিশেষ করে মোবাইল ও ওয়েব ইন্টারফেজের জন্য। কালো দিয়ে শোক, আভিজাত্য, ঐতিহ্য থেকে আবিষ্কার সবকিছু প্রকাশ করা যায়।
কালো রঙের ব্যবহার
- ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে কালো আভিজাত্য, বিলাশ ও শৌখিনতা ফুটিয়ে তোলে।
- কালো কতৃত্ব, ক্ষমতা, গাম্ভীর্য ও জ্ঞানের প্রতীক।
- নেতিবাচক অনুভূতি— শোক, অবসাদ, দুঃখ ও শোকের প্রতীক।
কালার সাইকোলজি—সাদা
সাদা পবিত্রতা ও স্বচ্ছতার প্রতীক। অনেক সময় এক টুকরো সাদা কাগজ দ্বারা নতুন আবিষ্কার করা বোঝাতে পারে।অতিরিক্ত সাদা রঙ ব্যবহার একাকীত্ব ও শূন্যতা বোঝায়। তবে সাদা একটি বহুল ব্যবহৃত ব্যাকগ্রাউন্ড কালার যা ইন্তারফেজে স্পেস বোঝাতে সাহায্য করে।
সাদা রঙের ব্যবহার
- সাদা সহজ ও স্বচ্ছতার প্রতীক
- সাদা একাকীত্ব, শূন্যতা ও ঊষরতার প্রতীক ও হতে পারে।
কালার সাইকোলজি— ধূসর
ধূসর কুল ও নিউট্রাল ক্যাটাগরির একটি কালার। গ্রে এর টোন-ভ্যারাইটির উপর ভিত্তি করে ডিজাইনকে বেশ সফিস্টিকেটেড ও এলিগেন্ট লুক দেওয়া যায়।
ধূসর রঙের ব্যবহার
- ক্লাসিক, সিরিয়াস ও রিলায়েবল কালার।
- ব্যালেন্স ও নিউট্রিয়ালিটির জন্য ডিজাইনারদের দ্বারা সমাদৃত।
- অবসাদ, বিষন্নতার প্রতীক হতে পারে।
কালার সাইকোলজি—বাদামী
বাদামী মাটি ও কাঠের রঙ। এর আর্থি লুকের কারণে এটি ব্যাকগ্রাউন্ড কালার হিসেবে বেশ ভালো। নিরাপত্তা, রক্ষা, আরাম স্থায়িত্ব বোঝাতে বাদামী বেশ কার্যকর।
বাদামী রঙের ব্যবহার
- বাদামী আরাম-আয়েশের কালার।বাদামী ঘরোয়া, উষ্ণ অনুভূতি প্রদান করে।
- বাদামী ব্র্যান্ডকে সিরিয়াস ও ম্যাচিউর লুক দেয়।
- বাদামী বিদীর্ণ ও রক্ষণশীল লুক দিতে পারে।
কালার সাইকোলজি—হলুদ
হলুদ রঙের কথা উঠলেই প্রথমে সূর্যের কথা আসে। হলুদ আনন্দ-উল্লাস, অনুপ্রেরণার রঙ। তবে অতিরিক্ত হলুদ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে ভীতির সঞ্চার করতে পারে।
হলুদ রঙের ব্যবহার
- হলুদ ইতিবাচকতা, আনন্দ ও উষ্ণতার রঙ ।
- হলুদ ভীতি, উদ্বেগ ও হতাশার সঞ্চার করতে পারে।
কালার সাইকোলজি—কমলা
বলা হয়ে থাকে যে, কমলা রঙ হলুদের আনন্দ ও লালের শক্তিকে ধারণ করে। তাই এটি একটি উদ্দীপ্ত ও ইতিবাচক রঙ। কমলা অনুপ্রেরণা, তারুণ্য ও উদ্দীপনার রঙ। কমলা সাধারণত আনন্দ ও রোমাঞ্চকর অনুভূতি প্রকাশ করে।
কমলা রঙের ব্যবহার
- পশ্চিমা সংস্কৃতিতে কমলা শরৎ, হ্যালুইন ও আরামের সাথে সংযুক্ত।
- কমলা ইতিবাচকতা, আনন্দ ও অনুপ্রেরণার রঙ।
- অনেক সময় কমলা অপরিপক্কতা, অবহেলা, বিপদ সংকেত ও কৃত্তিমতা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
কালার সাইকোলজি—গোলাপি
রোমান্স, সেনসিটিভিটি ও সিনসিয়ারিটির প্রতীক। ফেমিনিটি ও ইয়ুথের সাথে গোলাপি রঙ বিশেষভাবে সম্পৃক্ত। যাদের টার্গেট অডিয়েন্স নারীরা তাঁদের কাছে গোলাপি সমাদৃত।
গোলাপি রঙের ব্যবহার
- গোলাপি তারুণ্য, সরলতা ও সৃজনশীলতার প্রতীক
- এটি ব্র্যান্ডকে এক্সট্রাভেগেন্ট, এক্সেন্ট্রিক ও ইমপালসিভ লুক দেয়।
কালার সাইকোলজিতে ডেমোগ্রাফিকস এর গুরুত্ব
যেহেতু কালার সাইকোলজিতে বয়স, জেন্ডার ও কালচার গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে তাই ব্র্যান্ড কালার সিলেকশোনে ডেমোগ্রাফিকসকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিৎ ।
জেন্ডার বিবেচনায়
রঙ নির্বাচনে ব্যক্তির জেন্ডার গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। আসুন এর ভূমিকা জেনে নেয়া যাক।
- কুল টোন > ওয়ার্ম টোন; যদিও নীল, সবুজ এবং এদের টিন্টগুলো উভয়ের কাছেই সমাদৃত।
- উভয়েরই প্রথম পছন্দ নীল।
- কমলা ও বাদামী খুব একটি জনপ্রিয় নয়।
- পুরুষের পছন্দ রঙ, নারীরা রঙের বিভিন্ন শেডকে বেশি প্রাধান্য দেয়।
বয়স বিবেচনায়
বয়সের উপর কালার প্যালেট অনেকাংশে নির্ভর করতে পারে। বাচ্চারা ওয়ার্ম কালার
(লাল, কমলা) বেশি পছন্দ করে।বাচ্চারা অনেক সময় রঙ পরিবর্তন করতে ভালোবাসে, কিন্তুরা বড়রা তাঁদের পছন্দের রঙকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।
সাংস্কৃতিক বিবেচনায়
বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্ন রঙের আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। যেমন, নীল পাশ্চাত্যে একটি পুরুষতান্ত্রিক রঙ হলেও চীনা সংস্কৃতিতে এটি নারীর প্রতীক। কিন্তু সাদাকে ধরা হয় মৃত্যু ও দুর্ভাগ্য যেখানে কমলা সুস্বাস্থ্যের প্রতীক।
হিন্দুধর্মানুসারে, হলুদ বাণিজ্য ও পবিত্রতার প্রতীক। ল্যাটিন আমেরিকায় লাল যুদ্ধ ও সামরিকতার প্রতীক।
উপসংহার
পজেটিভ ইউজার এক্সপেরিয়েন্স তৈরির জন্য কালার সাইকোলজি খুবই পাওয়ারফুল একটি টুল। এটি ডিজাইন শিল্পে এমন একটি তুলির ছোঁয়া যা একই সাথে ব্র্যান্ড ও প্রোডাক্টকে পজেটিভ লুক দেয় এবং ডিলাইটেড ইউজার এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করে। পরিশেষে, কালার সাইকোলজি সেরকমই হতে হবে যেরকমটা অডিয়েন্স প্রেফার করে।
কি? রঙের সাইকোলজিক্যাল বিষয়গুলো জানলেন তো? Now Just Practice!
এখনই শুরু করে দিন আপনার UI/UX ডিজাইন জার্নিটা। ভালো ডিজাইন ফাউন্ডেশন, ডিজাইন সেন্স, কোনো একটি স্পেসিফিক নিশ- এ দক্ষ হবার এখনই তো সময়।
হ্যাপি ডিজাইনিং…