যেভাবে সিভি/ রেজিউমে বানালে তা আপনাকে চাকরির নিশ্চয়তা দেবে

ডিজাইন সিভি তৈরি করে কঠিন হলে ও অসম্ভব নয় কিন্তু!

-----লার্ন ডিজাইন//

“প্রথমেই বলে নেয়া ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য কোনো জটিল কিংবা দুর্বোধ্য সিভি বা রেজিউমে বানানোর প্রয়োজন নেই। একটি সিম্পল এবং রেলেভেন্ট সিভি হায়ারিং ম্যানেজারদের ইম্প্রেস করার জন্য যথেষ্ট।

ডিজাইনার হিসেবে আপনি হয়তো মনযোগ আকর্ষনের জন্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিক ডিজাইনের সিভসি/রেজিউমে বানানোর কথা ভাবছেন।কিন্তু সিভিটি যথাসম্ভব সিম্পল ও রেলেভেন্ট করা ভালো। কারণ যিনি প্রথমে আপনার সিভিটি দেখবেন তিনি হয়তো ডিজাইনার নাও হতে পারেন।




একটি দুর্দান্ত “রেজিউমে ডিজাইনে” যা যা থাকতে হবে

ডিজাইন ইন্ডাট্রির সিভিতে ততটুকু তথ্য দেয়াই যুক্তিসঙ্গত যা সাধারণত, অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির রেজিউমেতে থাকে। যে সকল তথ্য দিতে হবে:

কন্ট্যাক্ট ইনফরমেশন

এই সেকশনে আপনার নাম, ফোন নাম্বার, ইমেইল এড্রেস এবং ওয়েবসাইট এবং পোর্টফোলিওর URL রাখতে হবে।

কাজের অভিজ্ঞতা

এটি সম্ভবত একটি রেজিউমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পূর্বে আপনি কি কি পজিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনাসহ, তারিখ বা সময় উল্লেখ করে একটি টাইমলাইন তৈরি করুন। অপ্রাসঙ্গিক কিছু না লেখাই ভালো। আপনার এচিভমেন্ট এবং সাকসেস্ফুল কাজগুলোকে হাইলাইট করুন।

টিপস– যদি আপনার ওয়ার্ক হিস্টোরিতে টাইম গ্যাপ থাকে তাহলে স্পেসিফিক ডেট এর বদলে শুধু ইয়ার ব্যবহার করুন।

প্রাসঙ্গিক স্কিলস

আপনার দক্ষতাগুলো বা দক্ষতাটি এখানে হাইলাইট করুন, যেমন: UX/UI ডিজাইন, ইউজার টেস্টিং, মোবাইল ডিজাইন ইত্যাদি। যে টুলগুলো ব্যবহারে আপনি দক্ষ বা যেসকল টুল আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন, যেমন: Figma, Sketch, Adobe ইত্যাদি সেগুলোও রাখুন। আপনার সম্পন্ন করা রেলেভেন্ট টেস্টগুলোও আপনি এখানে এড করতে পারেন।

অর্জন বা সম্মাননা

আপনার করা কাজ বা প্রোজেক্ট যদি কোন সম্মাননা পেয়ে থাকে কিংবা আপনি যদি কোনো সম্মাননা পেয়ে থাকেন বা আপনি যদি উল্লেখযোগ্য কোনো ডিজাইন কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করে থাকেন সেটিও এড করুন।

শিক্ষা ও যোগ্যতা

আপনি যদি ডিজাইনের উপর কোনো কোর্স সম্পন্ন করে থাকেন বা এই সম্পর্কিত কোনো সার্টিফিকেট পেয়ে থাকেন তা এখানে এড করুন। আপনার ফর্মাল এডুকেশন, ইন্সটিউশনাল এডুকেশন, সার্টিফিকেশন এই সেকশনে রাখুন।

ডিজাইনে ফোকাস করুন

ক্রিয়েটিভ ডিজাইনই শুধু ডিজাইনার হিসেবে অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির রেজিউমে থেকে ইউনিক আইডেন্টিটি দেয়। কিন্তু আপনাকে এটাও মনে রাখতে হবে যিনি সর্বপ্রথম আপনার রেজিউমেটি দেখবেন তিনি ডিজাইনার নাও হতে পারেন। তাই রিডেবিলিটির দিকে লক্ষ্য রাখুন।

লে আউটটি সিম্পল রাখুন। কালার এবং ভিজ্যুয়াল হায়ারার্কি ব্যবহার করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হাইলাইট করুন। ইনফরমেশন আর্কিটেকচারে মনযোগ দিন।



কভার লেটার

একটি ইন্ডাস্ট্রি স্ট্যান্ডার্ড সিভি/রেজিউমের পাশাপাশি আপনার একটি স্ট্যান্ডার্ড কভার লেটার প্রয়োজন। আলাদা আলাদা পজিশন অনুযায়ী কভার লেটারটি কাস্টমাইজ করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি বেসিক ভার্সন তৈরি করে রাখলে প্রয়োজন অনুযায়ী সেটিকে পরবর্তীতে কাস্টমাইজ করা যাবে।

কভার লেটারটি আকারে খুব বড় হবে না এবং সেখানে এমপ্লয়ার যে কোয়ালিটি চাচ্ছেন সেই ধারাবাহিকতায় সংক্ষিপ্ত আকারে আপনার রেলেভেন্ট স্কিল এবং ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্স রাখুন।

কভার লেটারটি তিনটি প্যারাগ্রাফে সীমাবদ্ধ রাখা ভালো। একটি ইন্ট্রোডাকশন প্যারাগ্রাফ, কেন আপনি এই পদের জন্য যোগ্য সে সম্পর্কিত একটি প্যারা এবং কেন আপনি এই পদের প্রতি আগ্রহী তা সম্বলিত একটি ক্লোজিং প্যারাগ্রাফ।

পোর্টফোলিও

আপনার পোর্টফোলিওটিকে আপনার ডিজাইন স্কিল এবংআপনার কাজ করা সবচেয়ে ভালো প্রোজেক্টগুলো সম্পর্কে গোছানো প্রতিফলন হতে হবে।

এখানে স্টোরি টেলিং করা যেতে পারে। ধরুন, একটি UX ডিজাইন প্রোজেক্টের পোর্টফোলিওতে একটি স্পেসিফিক সমস্যার কথা বলে শুরু করে যেতে পারে এবং কিভাবে ডিজাইনাররা তাঁদের মেধা দ্বারা সেটি সমাধান করলেন এবং ইউজাররা কিভাবে সেটা গ্রহণ করেছিলো….অর্থাৎ, পোর্টফোলিওর ছবিটি নয়, আবেগ অনুভূতি যোগ করে এর পেছনের গল্পটি বলুন।

আপনার পোর্টফোলিওটি হবে আপনার প্যাশনের প্রতিফলন। বেসিক কালার প্যালেট ও টাইপোগ্রাফীর মাধ্যমে আপনার ব্র্যান্ড আইডেন্টেটি ফুটিয়ে তুলুন। তবে, আপনার রেজিউমে এবং পোর্টফোলিওর তথ্যের সামঞ্জস্যতা অবশ্যই বজায় রাখুন।



আপনার সিভি/রেজিউমেটি আপনার এবং আপনার পছন্দের চাকরিটির মাঝে যোগসূত্র বা সেতুর মতো কাজ করে। তাই হায়ারিং টিমের কাছে এটি যত নিখুঁত ও সুন্দরভাবে আপনাকে ফুটিয়ে তুলতে পারবে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ততো বেড়ে যাবে।

কি? ডিজাইন সিভি/ রেজিউমে তৈরির প্রসেস সম্পর্কে জানলেন তো? Now Just Practice!

এখনই শুরু করে দিন আপনার UI/UX ডিজাইন জার্নিটা। ভালো ডিজাইন ফাউন্ডেশন, ডিজাইন সেন্স, কোনো একটি স্পেসিফিক নিশ- এ দক্ষ হবার এখনই তো সময়।

হ্যাপি ডিজাইনিং…